বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এক গম্বুজ মসজিদ / রণবিজয়পুর মসজিদঃ

বাংলাদেশের এক গুম্বজ বিশিষ্ট মসজিদের মধ্যে সর্ববৃহৎ মসজিদ হচ্ছে রণবিজয়পুর মসজিদ। বাংলাদেশের এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা অবস্থিত বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলায়।

এক গম্বুজ মসজিদটি বাগেরহাট জেলা সদর থেকে পশ্চিমে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার এবং ষাটগুম্বজ মসজিদ থেকে পূর্বে ১.৫০ কি.মি. দূরে অবস্থিত। এই এক গুম্বজ বিশিষ্ট মসজিদটি ষাটগুম্বজ ইউনিয়নের রনবিজয়পুর গ্রামে হওয়ায় এই মসজিদটি রণবিজয়পুর মসজিদ নামেও পরিচিত ছিল।

মসজিদটির আদি নাম অনেকের মতেই দরিয়া খাঁ’র মসজিদ। হযরত খান জাহান আলীর সহচর ছিলেন এই দরিয়া খাঁ। রণবিজয়পুর মসজিদ নির্মিত সাল ধারণা করা হয়ে থাকে হযরত খানজাহান আলীর সময়কালে (১৪৫৯)। বাংলাদেশের বৃহত্তম গম্বুজ অবস্থিত রণবিজয়পুর মসজিদে। ইটের তৈরী মসজিদের দেয়ালগুলো বেশ পুরু। পশ্চিম পাশের দেয়াল ব্যতিত বাকী তিনটি দেয়ালের প্রতিটিতে তিনটি করে দরজা আছে। পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব আছে। মাঝের মেহরাবটি অন্য দুটি মেহরাবের তুলনায় বড়। বাইরে থেকে মসজিদের আয়তন ৫৬ বর্গফুট এবং ভেতরের দিকে ৩৬ বর্গফুট। মসজিদের প্রাচীর দশ ফুটের মত চওড়া। মসজিদের কার্নিশ সামান্য বাঁকানো এবং চারকোনার বাইরের বুরুজ কার্নিশের উপর পর্যন্ত বিস্তৃত।

এই মসজিদে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম গম্বুজ (১১ মিটার)। ফুলের নকশা রয়েছে এর মূল মিহরাবে। ৩টি প্রবেশদ্বার রয়েছে মসজিদের উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে এবং ৩টি পোড়ামাটির অলংকরন করা রয়েছে এর দেওয়ালে রয়েছে। এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয় খান জাহানের স্থাপত্যশৈলী অনুসরণ করে।

 

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে বাসে সরাসরি বাগেরহাট যাওয়া যায়। এছাড় কমলাপুর থেকে ট্রেনে খুলনা হয়ে বাগেরহাট যাওয়া যায়। অপরদিকে সদরঘাট থেকে ষ্টিমারে মোড়েলগঞ্জে নেমে সেখান থেকে বাগেরহাটের এক গম্বুজ মসজিদে চলে যেতে পারেন।

গাবতলী থেকে সোহাগ (০১৭১৮৬৭৯৩০২), শাকুরা (০১৭১১০১০৪৫০), হানিফ ও ইগল পরিবহন ছেড়ে যায়। ভাড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘন্টা।

ঢাকার সায়দাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এবং সন্ধা ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত অনেকগুলা গাড়ী ছেড়ে যায়। – মেঘনা (০১৭১৭১৭৩৮৮৫৫৩), পর্যটক (০১৭১১১৩১০৭৮), বনফূল, ফাল্গুনী, আরা, বলেশ্বর, হামিম ও দোলা।

প্রথমে আপনারা আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে খুলনা গিয়ে তারপর বাস ধরে বাগেরহাটে যেতে পারেন। ৪০ মিনিট সময় লাগতে পারে রূপসা থেকে বাগেরহাটে যেতে।

কোথায় থাকবেনঃ

বাগেরহাট সদরে বিভিন্ন হোটেল ও সরকারি গেস্টহাউস আছে।

রেল রোডে অবস্থিত মমতাজ হোটেলে থাকতে পারেন। এই হোটেলটিতে সুযোগ সুবিধা কম থাকলেও সেবার মান মোটামোটি ভাল এবং খরচও একটু বেশি। এছাড়া এই হোটেলের আশেপাশে থাকার জন্য আরো কিছু হোটেল রয়েছে।

খান জাহান আলীর মাজারের সামনে মেইন হাইওয়েতে থাকতে পারবেন “হোটেল অভি”-তে । ভাড়া ৪০০ টাকা। ফোন: ০১৮৩৩৭৪২৬২৩।

বাগেরহাটে থাকার জন্য হোটেলের মধ্যে-

হোটেল আল আমিন কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন সংলগ্ন (০৪৬৮-৬৩১৬৮, ০১৭১৮৬৯২৭৩৭, ১ হাজার টাকায় এসি দ্বৈত কক্ষ এবং নন এসি কক্ষ ১০০ থেকে ৪০০ টাকায় পেয়ে যাবেন)

হোটেল মোহনা কর্মকার পট্টিতে (০৪৬৮-৬৩০৭৫, ০১৭২২৮৫৮৩১৩, নন এসি কক্ষ ১০০ থেকে ৪০০ টাকায়।

সময় কম লাগায় খুলনা থেকে বাগেরহাটে আসতে আপনারা চাইলে খুলনাতেও থাকতে পারেন।

Share this post