নয় গম্বুজ মসজিদ

নয় গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। ঠাকুর দিঘী বা খাঞ্জেলী দিঘীর পশ্চিম পাড়ে নয়গম্বুজ মসজিদ অবস্থিত। ১৬.৪৫ মিঃX১৬.১৫মিঃ ভূমি পরিকল্পনায় নির্মিত মসজিদের দেয়াল ২.৫৯মিটার পুরু। মসজিদের অভ্যন্তরে দুই সারি পাথরের পিলার দিয়ে মোট নয়টি চারকোনা খন্ডে বিভক্ত করা হয়েছে।এই নয়টি খন্ডের উপর মসজিদের নয়টি গম্বুজ অবস্থিত। ছাদের উপর তিন সারিতে নয়টি গম্বুজ অবস্থিত। গম্বুজ গুলো পরস্পর থেকে সমান দূরত্বে অবস্থিত। পশ্চিম দেয়ালে নির্দিষ্ট দূরত্বে তিনটি মেহরাব রয়েছে। মসজিদের ভেতরে এবং বাইরে ইটের নকশা ও পোড়ামাটির কারুকাজ রয়েছে। মসজিদে প্রবেশের জন্য সামনের অংশে একটি প্রধান ও সমদূরত্বে দুটি পার্শ্ব দরজা আছে।

নয় গম্বুজ মসজিদ – Best 9 Dome Mosque

বাগেরহাটের নাম করন কে করে দিয়েছিলেন তা গবেষণা সাপেক্ষ হলেও আজ তা নিরূপন করা দুঃসাধ্য। কারো কারো মতে জানা যায় বাগেরহাটের নিকটবর্তী সুন্দরবন থাকায় এলাকাটিতে বাঘের উপদ্রব ছিল, এ জন্যে এ এলাকার নাম হয়ত ‘‘বাঘেরহাট’’ হয়েছিল এবং সময়ের সাথে সাথে তা বাগেরহাট-এ রূপান্তরিত হয়েছে। মতান্তরে হযরত খান জাহান আলী এর প্রতিষ্ঠিত ‘‘খলিফাত-ই-আবাদ’’ এর বিখ্যাত ‘‘বাগ’’ অর্থ বাগান, এ অঞ্চলে এতই সমৃদ্ধি লাভ করে যে, এ থেকেই হয়ে দাঁড়িয়েছে বাগের আবাদ তথা ‘‘ বাগেরহাট’’।

তবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য মতটি হচ্ছে শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত নদী ভৈরব এর উত্তর দিকের হাড়িখালী থেকে বর্তমান নাগের বাজার পর্যমত্ম যে লম্বা বাঁক অবস্থিত, পূর্বে উক্ত বাঁকের পুরাতন বাজার এলাকায় হাট বসত। আর এ হাটের নামের সাথে মিল রেখে এ স্থানটির নাম হলো বাঁকেরহাট। কালক্রমে বাঁকেরহাট এর পরিবর্তিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাগেরহাট নাম।

 

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে বাসে সরাসরি বাগেরহাট যাওয়া যায়। এছাড় কমলাপুর থেকে ট্রেনে খুলনা হয়ে বাগেরহাট যাওয়া যায়। অপরদিকে সদরঘাট থেকে ষ্টিমারে মোড়েলগঞ্জে নেমে সেখান থেকে বাগেরহাটের নয় গম্বুজ মসজিদে চলে যেতে পারেন।

গাবতলী থেকে সোহাগ (০১৭১৮৬৭৯৩০২), শাকুরা (০১৭১১০১০৪৫০), হানিফ ও ইগল পরিবহন ছেড়ে যায়। ভাড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘন্টা।

ঢাকার সায়দাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এবং সন্ধা ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত অনেকগুলা গাড়ী ছেড়ে যায়। – মেঘনা (০১৭১৭১৭৩৮৮৫৫৩), পর্যটক (০১৭১১১৩১০৭৮), বনফূল, ফাল্গুনী, আরা, বলেশ্বর, হামিম ও দোলা।

প্রথমে আপনারা আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে খুলনা গিয়ে তারপর বাস ধরে বাগেরহাটে যেতে পারেন। ৪০ মিনিট সময় লাগতে পারে রূপসা থেকে বাগেরহাটে যেতে।

কোথায় থাকবেনঃ

বাগেরহাট সদরে বিভিন্ন হোটেল ও সরকারি গেস্টহাউস আছে।

রেল রোডে অবস্থিত মমতাজ হোটেলে থাকতে পারেন। এই হোটেলটিতে সুযোগ সুবিধা কম থাকলেও সেবার মান মোটামোটি ভাল এবং খরচও একটু বেশি। এছাড়া এই হোটেলের আশেপাশে থাকার জন্য আরো কিছু হোটেল রয়েছে।

খান জাহান আলীর মাজারের সামনে মেইন হাইওয়েতে থাকতে পারবেন “হোটেল অভি”-তে । ভাড়া ৪০০ টাকা। ফোন: ০১৮৩৩৭৪২৬২৩।

বাগেরহাটে থাকার জন্য হোটেলের মধ্যে-

হোটেল আল আমিন কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন সংলগ্ন (০৪৬৮-৬৩১৬৮, ০১৭১৮৬৯২৭৩৭, ১ হাজার টাকায় এসি দ্বৈত কক্ষ এবং নন এসি কক্ষ ১০০ থেকে ৪০০ টাকায় পেয়ে যাবেন)

হোটেল মোহনা কর্মকার পট্টিতে (০৪৬৮-৬৩০৭৫, ০১৭২২৮৫৮৩১৩, নন এসি কক্ষ ১০০ থেকে ৪০০ টাকায়।

সময় কম লাগায় খুলনা থেকে বাগেরহাটে আসতে আপনারা চাইলে খুলনাতেও থাকতে পারেন।

বাগেরহাটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ –

১. ষাট গম্বুজ মসজিদ
২. খান জাহান আলীর মাজার
৩. এক গম্বুজ মসজিদ
৪. কোদলা মঠ

Share this post