Faridpur AC Road – এসি রোড ফরিদপুর বাসীর জন্য আকর্ষনীয় স্থান। সবুজ শ্যামল প্রকৃতির বুকচিরে চলে গেছে এই সবুজের চাদরে মোড়ানো রাস্তাটি। এই রাস্তার নামকরনের সাথে রয়েছে অনেক মিল তার কারন আপনি ঘুরতে গেলে নিজেই খুঁজে পাবেন। এই রাস্তাটি সবুজ গাছপালায় ঘিরে রয়েছে এবং রাস্তাটি ফসলি জমির মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়ায় প্রাকৃতিক ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হয়। এই কারনেই হয়তো রাস্তাটির নাম হয়েছে এসি রোড। আর এই সবুজ শ্যামল অরণ্যের মাঝে হারিয়ে যেতে কার মন না চায় বলেন?
এসি রোড, ফরিদপুর – AC Road Faridpur
ঠিক এই রাস্তায় গেলে আপনাকে হারিয়ে যেতে হবে গহীন সবুজ প্রকৃতির মাঝে যেখানে আপনি ঘুরতে পারবেন শান্তিতে তাই মন স্থির করে ঘুরে আসতে পারেন। শত ব্যস্ততা শত কাজ ছেড়ে ঘুরে যেতে পারেন ফরিদপুর এসি রোড থেকে। সব ব্যস্ততার ফাঁকে মনটাকে একটু সবুজের সমারহে কিছু সময় ব্যস্ত রাখতে চলে যেতে পারেন। তাই দেরি না করে ঘুরে আসুন এই রাস্তা থেকে। তবে এখানে আপনি এক এক সময় এক এক দৃশ্য দেখতে পারবেন কারন বর্ষায় এক রকমতো গ্রীষ্মে আরেক রকম।
বসন্তের সময়ে দেখতে পাবেন অন্য রকম আরেক রাস্তা মানে তখন পাতা ঝরা গাছগুলো নতুন পাতা গজিয়ে নতুন রুপের আগমন ঘটায়। চারদিকে সবুজের ছড়াছড়ির জন্যই মনে হয় গাছে গাছে নতুন কচি পাতা ও পুষ্প মঞ্জরির সমারোহ হয়। সবুজের ঢেউ খেলা দিগন্ত বিস্তৃত ধানের খেত। পাতায় পাতায় যেন আলোর নাচন। প্রকৃতি ভরে উঠে রং-বেরঙের ফুলে ফলে এক অনুপম সৌন্দর্যে।
ফরিদপুর শহর থেকে ফরিদপুর এসি রোড ( Faridpur AC Road ) প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে ভাজনডাঙ্গা ও সাদিপুর নামক স্থানে ফরিদপুর টু সদরপুর যাওয়ার রাস্তার সাথে সংযুক্ত এই রাস্তাটি। এটি ফরিদপুরের একটি ভ্রমণ স্পট হিসাবেও অনেকে জেনে থাকে। আর ভ্রমণ প্রেমীদের কাছে ফরিদপুর এসি রোড একটি মনোমুগ্ধকর টুরিস্ট স্পট (Faridpur Tourist Spot) হিসাবেও পরিচিত। শহরের বাইরে কোলাহলমুক্ত নির্জন পরিবেশে সময় কাটাতে চাইলে পরিবার পরিজন অথবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই রাস্তাটি থেকে।
কিভাবে যাবেন
বাংলাদেশের যেকোন জায়গা থেকে আপনাকে প্রথমে ফরিদপুর আসতে হবে।
ঢাকার গাবতলী থেকে গোল্ডেন লাইন এবং সাউথ লাইন পরিবহনের বাস পাওয়া যায়। এসি ৬০০ টাকা এবং নন-এসি ৩৫০ টাকা ভাড়া। এদুটো বাস চেয়ার কোচ। এছাড়া নরমাল বাস রয়েছে সাউথ লাইন, কমফোর্ট লাইন, সুবর্ণ পরিবহণ। এই বাসে করে ফরিদপুর চলে যেতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়াই। ফরিদপুর শহরের যে কোন স্থান থেকে রিক্সা কিংবা অটোতে করে ফরিদপুর এসি রোডে যাওয়া যায়। আর আপনি যদি বাইক বা নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যেতে চান তবে ম্যাপ লোকেশন এর জন্য ক্লিক করুন Faridpur AC Road.
কোথায় থাকবেন
ফরিদপুরে যাওয়ার পর আপনারা যারা ভ্রমণকারীরা রয়েছেন তাদের থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল। ফরিদপুর নতুন ও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এবং এর আশেপাশেই রয়েছে আবাসিক হোটেল গুলো। আবাসিক হোটেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০০ টাকা সর্বোচ্চ ভাড়া ১৫০০ টাকা। আবাসিক হোটেল গুলোতে সকল ধরনের বেড মানে সিঙ্গেল ও ডাবল উভয় বেড রয়েছে। সরকারি কর্মকতা ও কর্মচারীদের জন্য রয়েছে সার্কিট হাউজ।
কোথায় খাবেন
ফরিদপুর পুরো শহর জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন মানের অনেক খাবারের হোটেল। ফরিদপুর নিউ মার্কেটের কাছে পেয়ে যাবেন অনেক খাবারের হোটেল। ফরিদপুরে মিষ্টি খাওয়ার জন্য বিভিন্ন মানের নাম করা মিষ্টির দোকান যেমন – তেতুলতলার মিষ্টি, বাগাটের মিষ্টি। ফরিদপুর বাস স্ট্যান্ড মানে ফরিদপুর শিশুপার্কের পাশেই কয়েকটি খাবার হোটেল রয়েছে। আবার যদি ফরিদপুর পুরাতন বাস স্ট্যান্ডে যান সেখানেও পেয়ে যাবেন খাবারের কিছু হোটেল।
ফরিদপুরে শহরের আশেপাশের স্থান সমূহের মধ্যে ফরিদপুর শিশুপার্ক, পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের বাড়ি, ধলার মোড় ও নদী গবেষনা ইনস্টিটিউট। ফরিদপুর জেলার অন্যান্য জায়গা ঘুরতে হলে আপনার হাতে কয়েক দিন সময় নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। তা না হলে সময়ের অভাবে আপনি সবগুলো জায়গা ঘুরে দেখতে পারবেন না।
ফরিদপুর জেলার অন্যান্য ভ্রমণ স্থান সমূহঃ
ফরিদপুরে যাওয়ার পর ভ্রমণকারীর জন্য রয়েছে আরো বেশ কিছু দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান সমূহ –
১. পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের বাড়ি
২. ধলার মোড় (পদ্মার পাড়)
৩. ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশুপার্ক
৪. নদী গবেষনা ইনষ্টিটিউট
৫. হযরত শাহ ফরিদ মসজিদ
৬. জগদ্বন্ধু সুন্দর এর আশ্রম
৭. সাতৈর মসজিদ, বোয়ালমারি
৮. মথুরাপুরের দেউল
৯. পাতরাইল মসজিদ
১০. টিটা ভাসমান সেতু
১১. বাইশ রশি জমিদার বাড়ি
১২. ফান প্যারাডাইস পার্ক, ফরিদপুর